মোঃ হালিম রানা
জীবনযুদ্ধে স্ত্রীকে নিয়ে একা লড়াই করছেন বৃদ্ধ । তিনি বসবাস করছেন এক জরাজীর্ণ ছোট্ট একটি টিনের ঘরে, যা যে কোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে। তিনি দশ বছর ধরে প্যারালাইসিসে আক্রান্ত, এক মুহূর্তও দাঁড়াতে পারেন না, মাথার উপর ফাটা টিনের ছাউনি, দেয়ালে জীর্ণ কাঠ এ যেন দারিদ্র্যের এক বাস্তব চিত্র।
কথা গুলো বলছি ভোলা সদর উপজেলার উত্তর দিঘলদী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের রজ্জব আলী সরদার বাড়ির শাজাহান মিয়া ( ৬৫)। এই অসহায় শাজাহান মিয়ার জীবন কাটছে অভাব আর কষ্টে। নেই কোনো স্থায়ী আয়ের উৎস, নেই সরকারি সাহায্য। প্রায় ১০বছর ধরে একা নিঃসহায় এবং প্রায় উপেক্ষিত এই মানুষটি কেবলমাত্র এলাকাবাসীর কিছুটা সহানুভূতিতেই এখনো বেঁচে আছেন।
শাহাজাহান মিয়ার সম্পত্তি আছে শুধু সামান্য এক খণ্ড জমি, তারই উপর দাঁড়িয়ে আছে এক জীর্ণশীর্ণ ঘর, বৃষ্টি থেকে রক্ষা পেতে ঘরের চালে টিন দিয়ে ঢেকে দিয়েছেন। তারপরও বৃষ্টি বা বন্যা এলেই পানিতে ভিজে কাঁদা হয়ে যায়। তখন আর ঘরে থাকতে পারে না আশ্রয় নিতে হয় অন্যের ঘরে, অন্যের করুণার উপর ভরসা করতে হয়। থাকার মতো একটি খাট পর্যন্ত নেই।
রবিবার সকাল ১০টায় বাড়িতে গিয়ে দেখা গেলো, পান্তা ভাত আর পোড়া মরিচ,এই দিয়েই তাঁর সকালের খাবার সারছেন। কোনো প্রোটিন নেই, পুষ্টির তো প্রশ্নই আসে না। ঘরের চালার নিচে পড়ে থাকা এক জীবনের বেঁচে থাকা যেন আমাদের সমাজব্যবস্থার ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি।
স্থানীয়রা জানান, গত এক দশক ধরে শাহজাহান মিয়া সীমাহীন কষ্টে জীবন কাটাচ্ছেন। তাঁরা নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী যেটুকু পারেন, সহায়তা করেন। কেউ একবেলা খাবার দেন, কেউ ওষুধ, কেউবা একটু সেবা। কিন্তু এটি কখনোই পর্যাপ্ত নয়। এখন সময় সমাজের বিবেকবান, বিত্তবান, এবং প্রশাসনের সক্রিয় হবার। জেলা প্রশাসকের কাছে এলাকাবাসীর আকুল আবেদন, শাহজাহান মিয়ার দিকে মানবিক দৃষ্টিতে তাকান। তাঁর চিকিৎসা, খাদ্য ও বাসস্থান নিশ্চিত করুন। এটাই একজন নাগরিক হিসেবে তাঁর ন্যায্য অধিকার। সমাজের যারা ভালো আছেন, তারা যদি একবার এগিয়ে আসেন, তাহলে এমন অসহায় মানুষগুলোর জীবনেও আলো ফিরবে।
শাজাহান মিয়া বলেন, আমি দশ বছর ধরে প্যারালাইসিসে আক্রান্ত। সরকার অনেককে ঘর দিয়েছেন বলে শুনেছেন। একটি বাড়ি পেলে অন্তত মাথা গোঁজার ঠাঁই হতো। সরকারের পক্ষ থেকে অথবা সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতায় যদি থাকার মতো একটি ঘরের ব্যবস্থা হয় তাহলে একটি মাথা গোঁজানোর পরিবেশ হতো আমার।
ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. মিজান বলেন, শাজাহান মিয়া অনেক অসহায় তিনি খুব কষ্টে আছেন।আমি বয়স্ক ভাতা করে দিয়েছি। আমি সাধ্য মতো চেষ্টা করবো তাদের সহযোগিতা করার।